Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

বিবাহ রেজিস্টার

 

বিবাহের নিবন্ধন/রেজিস্ট্রেশন কি? কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়?

মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪ (Muslim Marriage and Divorce (Registration) Act, 1974), এর বিধান মতেপ্রত্যেকটি বিবাহ নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক এবং এই উদ্দেশ্যে সরকার ম্যারেজ রেজিস্ট্রার নিয়োগ করিবেন। প্রত্যেক বিবাহ রেজিস্ট্রার সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতিটি বিবাহ এবং তালাক এর পৃথক নিবন্ধন বজায় রাখবেন।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯ [the Muslim Marriages and Divorces (Registration) Rules, 2009] এর অধীনে একটি বিবাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে – একটি বিবাহ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স প্রার্থীদের মাদ্রাসা বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলীম সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে যাদের বয়স ২১ – ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং একটি নির্ধারিত আবেদন পত্রে নির্ধারিত ফী সহ উপদেষ্টা কমিটি সচিবের বরাবরে আবেদন করতে হবে। উপদেষ্টা কমিটি বিবাহ রেজিস্ট্রার নির্বাচন করার বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করিবেন। উল্লেখ্য, একটি বিবাহ রেজিস্ট্রার এর সেবা একটি সরকারি সেবা নয়। একজন বিবাহ রেজিস্ট্রার ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই সেবা প্রদান করতে পারবেন।

বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফি:

১৯৭৫ সালের বিবাহ এবং তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা - ১৮ ধারাতে বর্ণিত হয়েছে -

(১) বিবাহ নিবন্ধন ফি বাবদ একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার মোহরানার প্রতি ১০০০/- (এক হাজার টাকা) বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১০/- (দশ টাকা) হারে সর্বনিম্ন ৫০/- (পঞ্চাশ টাকা) এবং সর্বোচ্চ ৪০০০/- (চার হাজার টাকা) আদায় করিতে পারিবেন।
(২) তালাক নিবন্ধনের জন্য ফি বাবদ একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার ২০০/- (দুই শত টাকা) আদায় করিতে পারিবেন।
(৩) কমিশনের বিবাহ বা তালাক নিবন্ধনের জন্য একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার নিম্নোক্ত ফি আদায় করিবেন -
  (ক) কমিশন ফি টাকা ২৫/- (পঁচিশ)
  (খ) কমিশন কার্যকর করার জন্য যাতায়াত ভাতা মাইল প্রতি ১/- (এক টাকা)
৪। পরিদর্শন এবং নকলের জন্য একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার নিম্নোক্ত ফি আদায় করিবেন -

(ক) নিকাহনামা বা তালাকনামার সহিমোহরী কপির জন্য –

সাধারণ টাকা ৫/-
জরুরী (urgent) টাকা ১০/-

মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধিকরণ

কি ধরণের সহায়তা

বিয়ে সম্পর্কিত সকল তথ্য সরকারী রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করাই হচ্ছে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন । একইভাবে তালাক সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সরকারী রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে তালাক রেজিস্ট্রশন । মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন -১৯৭৪অনুযায়ী নির্ধারিত ফি সাপেক্ষে প্রতিটি বিয়ে ও তালাক রেজিষ্ট্রি বাধ্যতামুলক করা হয়েছে । অতএব ইউ.পি র দায়িত্ব হলো প্রতিটি বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন নিশ্চিত করা । এ সম্পর্কে সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের দায়িত্ব স্পষ্ট করে পরিপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে ।

সংশ্লিষ্ট আইন ও ব্যাখ্যা

" (১৩) সংরক্ষিত আসনের সদস্য নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক ও এসিড নিক্ষেপ নিরোধ,বাল্য বিবাহ রোধ এবং বিবাহ নিবন্ধন নিশ্চিত করবেন এবং এ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং নারী ও শিশু কল্যাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ;"

( গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মণ্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার বিভাগ : প্রজেই-৩; স্মারক নং-প্রজেই-৩/ বিবিধ-১৪/২০০১/৮০১; তারিখ: ১০/০৯/০২ইং; পরিপত্র )

ব্যাখ্যা :

সংরক্ষিত আসনের সদস্য অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এলাকায় অনুষ্ঠিত বিবাহ রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ।

 

মুসলিম আইন অনযায়ী সংঘটিত বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না হওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।

[সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন]

ব্যাখ্যা :

১৯৭৪ সনের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইনটি ২০০৫ সনের ৯ নং আইনের মাধ্যমে সংশোধন করে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে । এই আইনে বলা হয়েছে যদি কোন বিয়ে কোন নিকাহ রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় তাহলে তিনি তখনই বিবাহটি রেজিস্ট্রিকৃত করবেন । অন্যদিকে যদি কোন বিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার ছাড়া অন্য কারো উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় সেক্ষেত্রে ঐ বিয়ের বর বিয়েটি অনুষ্টিত হবার  ত্রিশ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রারকে বিয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানাবেন । নিকাহ রেজিস্ট্রার ঐ বিয়ে সম্পর্কিত রির্পোট জানার সাথে সাথে বিয়েটি নিবন্ধন করবেন । যদি কেউ এই আইনের নির্দেশ অমান্য করেন তাহলে তিনি এই আইনের অধীনে অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হবে এবং এই অপরাধের জন্য আইন কর্তৃক নির্ধারিত শাস্তি হচ্ছে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা আর্থিক জরিমানা যা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে অথবা উভয় প্রকার শাস্তিই হতে পারে ।

এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের ক্ষেত্রে বিচারকার্য  একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট করবেন ।

কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে

১. এটি সংরক্ষিত আসনের সদস্য উপর স্থানীয় সরকারের উপর আরোপিত দায়িত্ব ; তথাপিও বিবাহের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের প্রশ্নে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যের সাথে যোগাযোগ করতে হবে ।

২. যেহেতু বিয়ে রেজিস্ট্রি না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাই বিয়ে অনুষ্ঠিত হবার তথ্য ত্রিশ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবাহ রেজিস্ট্রারকে জানাতে হবে অথবা বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে নিকাহ রেজিস্ট্রার তা রেজিস্ট্রি করবেন । যদি কেউ এই আইন অমান্য করেন তাহলে ভুক্তভোগী একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন । ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন ।

কতদিনের মধ্যে

বিবাহ অনুষ্ঠিত হবার দিন অথবা ত্রিশ দিনের মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় বিধায় এই সময়ের আগেই যোগাযোগ করতে হবে । বিশেষত নারীরা বিয়ে রেজিস্ট্রশন না করাজনিত সমস্যার সম্মুখীন হন বিধায় বিয়ে অনুষ্ঠিত হবার সাথে সাথেই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে জানানো উচিত । নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বিয়ের রেজিস্ট্রিশেন কপি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।

নারী ও শিশু কল্যাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য যেহেতু চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে তাই এক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা যেতে পারে ।

কিন্তু বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯৭৪ অনুযায়ী তালাক নিবন্ধনের কথা বলা আছে । কিন্তু তালাক কার্যকর হবার কতদিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা নাই ।

সাধারণত যে এলাকাতে বিয়ে সংঘটিত হয়েছে সেখানেই বিয়েটি রেজিস্ট্রি করতে হবে অন্যদিকে তালাক কার্যকর হবার এলাকাতেই তালাকটি রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে ।

 

ছবি

Untitled-2