Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
করোনাভাইরাসের লক্ষন ও করনীয়
বিস্তারিত

করোনাভাইরাস: লক্ষ্মণ, চিকিৎসা ও সুরক্ষার উপায় কী, কতটা মারাত্মক, কোথা থেকে এলো, কোন প্রাণী থেকে ছড়ালো, চীনে কেন?

করোনাভাইরাসছবির কপিরাইটADA YOKOTA

করোনাভাইরাস, যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯, সেই রোগটিকে এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই ভাইরাস- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- এর মধ্যেই চীনে অনেক মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভাইরাসটা কী?

করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস - যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি।

সারাবিশ্বে এরই মধ্যে ১৫০টির বেশি দেশে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী প্রাণহানি হয়েছে ৭ হাজারের বেশি মানুষের।

ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ - এনসিওভি বা নভেল করোনাভাইরাস। এটি এক ধরণের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রজাতি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।

২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪জনের মৃত্যু হয়েছিল আর ৮০৯৮জন সংক্রমিত হয়েছিল। সেটিও ছিল এক ধরণের করোনাভাইরাস।

নতুন এই রোগটিকে প্রথমদিকে নানা নামে ডাকা হচ্ছিল, যেমন: 'চায়না ভাইরাস', 'করোনাভাইরাস', '২০১৯ এনকভ', 'নতুন ভাইরাস', 'রহস্য ভাইরাস' ইত্যাদি।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

 

করোনাভাইরাস: লক্ষণ ও বাঁচার উপায় কী?

রোগের লক্ষ্মণ কী:

রেসপিরেটরি লক্ষণ ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ।

এটি ফুসফুসে আক্রমণ করে।

সাধারণত শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয় উপসর্গ দেখা দেয়, পরে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়।

সাধারণত রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচদিন সময় নেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে কিছু কিছু গবেষকের মতে এর স্থায়িত্ব ২৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

মানুষের মধ্যে যখন ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেবে তখন বেশি মানুষকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে এমন ধারণাও করা হচ্ছে যে নিজেরা অসুস্থ না থাকার সময়ও সুস্থ মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে মানুষ।

শুরুর দিকের উপসর্গ সাধারণ সর্দিজ্বর এবং ফ্লু'য়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া স্বাভাবিক।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অনেককে সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে যা ২০০০ সালের শুরুতে প্রধানত এশিয়ার অনেক দেশে ৭৭৪ জনের মৃত্যুর কারণ হয়েছিলো ।

নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এটি অনেকটাই সার্স ভাইরাসের মতো।

করোনাভাইরাস: আপনার যা করা প্রয়োজন

"আমরা যখন নতুন কোনো করোনাভাইরাস দেখি, তখন আমরা জানতে চাই এর লক্ষ্মণগুলো কতটা মারাত্মক। এ ভাইরাসটি অনেকটা ফ্লুর মতো কিন্তু সার্স ভাইরাসের চেয়ে মারাত্মক নয়," বলছিলেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্ক উলহাউস।

Banner image reading 'more about coronavirus'

কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে

নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে

নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের?

করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন

টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি?

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী

করোনাভাইরাস: কীভাবে শনাক্ত করছে বাংলাদেশ?

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর?

Banner

চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসটি প্রথম সনাক্ত হয়ছবির কপিরাইটGETTY IMAGES

Image captionচীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসটি প্রথম সনাক্ত হয়

কোথা থেকে এলো করোনাভাইরাস?

অনেক সময়ই কোন একটি প্রাণী থেকে এসে নতুন নতুন ভাইরাস মানব শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা সাম্প্রতিক ভাইরাসটির উৎস কোনো প্রাণী।

যতটুকু জানা যায়, মানুষের আক্রান্ত হবার ঘটনাটি ঘটেছে চীনের উহান শহরে সামুদ্রিক মাছ পাইকারি বিক্রি হয় এমন একটি বাজারে।

করোনাভাইরাস ভাইরাস পরিবারে আছে তবে এ ধরণের ছয়টি ভাইরাস আগে পরিচিত থাকলেও এখন যেটিতে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ সেটি নতুন।

বেশিরভাগ করোনাভাইরাসই বিপজ্জনক নয়, কিন্তু আগে থেকে অপরিচিত এই নতুন ভাইরাসটি ভাইরাল নিউমোনিয়াকে মহামারির দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে এবং অবশেষে এই রোগটির সংক্রমণ বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ায় এটিকে বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

 

করোনাভাইরাস থেকে কিভাবে আপনার ফোনটি নিরাপদ রাখবেন

কোন প্রাণী থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস?

একবার যদি ভাইরাসের উৎস প্রাণীটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে রোগটি মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়।

করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে চীনের উহানের দক্ষিণ সমুদ্রের খাবারের পাইকারি বাজারের সঙ্গে।

যদিও বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনাভাইরাস বহন করতে পারে (যেমন বেলুগা তিমি), ওই বাজারটিতে অনেক জীবন্ত প্রাণীও পাওয়া যেত, যেমন মুরগি, বাদুর, খরগোশ, সাপ- এসব প্রাণী করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুরের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।

জ্বর মাপার মাধ্যমে ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারেছবির কপিরাইটGETTY IMAGES

Image captionজ্বর মাপার মাধ্যমে ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে

ক্ষণগুলো কতটা মারাত্মক?

জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়।

এখন পর্যন্ত এই রোগে মারা যাওয়ার হার কম (১% থেকে ২% এর মধ্যে) - তবে এই পরিসংখ্যান পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ইউরোপের কোন কোন অঞ্চলে এখন অধিক মৃত্যুহারও দেখা যাচ্ছে।

৫৬ হাজার আক্রান্ত রোগীর উপর চালানো এক জরিপ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে:

  • এই রোগে ৬% কঠিনভাবে অসুস্থ হয় - তাদের ফুসফুস বিকল হওয়া, সেপটিক শক, অঙ্গ বৈকল্য এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা তৈরি হয়।
  • ১৪% এর মধ্যে তীব্রভাবে উপসর্গ দেখা যায়। তাদের মূলত শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি হয়।
  • ৮০% এর মধ্যে হালকা উপসর্গ দেখা যায় - জ্বর এবং কাশি ছাড়াও কারো কারো নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের কোনো ধরণের অসুস্থতা রয়েছে (অ্যাজমা, ডায়বেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ) তাদের মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চীন থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করে জানা যায় যে, এই রোগে নারীদের চেয়ে পুরুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা সামান্য বেশি।

আক্রান্ত ব্যক্তি যেন শ্বাস প্রশ্বাসে সহায়তা পায় এবং তার দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেন ভাইরাসের মোকাবেলা করতে পারে তা নিশ্চিত করা থাকে চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য।

করোনাভাইরাসছবির কপিরাইটBSIP

Image captionকরোনাভাইরাস

ভাইরাসটি কীভাবে ঠেকানো যেতে পারে?

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তাদের আবিষ্কৃত একটি টিকা নিয়ে মানুষের দেহে পরীক্ষা চালিয়েছে।

এই টিকার উপাদান হলো, কোভিড-নাইনটিন ভাইরাসের একটি জেনেটিক কোড - যা আসল ভাইরাসটি থেকেই নকল করে তৈরি করা হয়েছে। এই কপিটি বিপদজনক নয়, এবং এটা মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতেও পারে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভ্যাকসিনটি, বা এরকম যে আরো কয়েকটি টিকা এখন গবেষণার পর্যায়ে আছে - তাতে আদৌ কোন কাজ হবে কিনা তা জানতে আরো অনেক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।

বিজ্ঞানীরা সারা পৃথিবীজুড়েই বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন গবেষণার কাজ দ্রুততর করতে

এই রোগ থেকে এখন পর্যন্ত রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া।

যার মানে হলো:

মানুষজনের চলাচল সীমিত করে দেয়া।

হাত ধুতে সবাইকে সবাইকে উৎসাহিত করা।

স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরে রোগীদের আলাদা আলাদা করে চিকিৎসা সেবা দেয়া

রোগীদের ভাইরাস রয়েছে কিনা তা জানতে এবং রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকদের শনাক্ত করার জন্যও গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড বা নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজন।

বিদেশ থেকে আসা বহু মানুষকে কোয়ারেন্টাইনের আওতায় নিয়েছে বাংলাদেশছবির কপিরাইটNURPHOTO

Image captionবিদেশ থেকে আসা বহু মানুষকে কোয়ারেন্টাইনের আওতায় নিয়েছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

অন্য অনেক দেশের মত বাংলাদেশও করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এরই মধ্যে ইংল্যান্ড ছাড়া ইউরোপের সব দেশ থেকে যাত্রী আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত। অন্য অনেক দেশের সাথেও বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

১৭ই মার্চ থেকে দুই সপ্তাহের জন্য দেশের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন বিদেশ ফেরত যাত্রীরা হোম কোয়ারেন্টিন, সেল্ফ কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনের নিয়মকানুন মেনে চলেন।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বুধবার ঘোষণা দেন যে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা না মানলে শাস্তির ব্যবস্থা করবে সরকার।

ভাইরাসটির কি পরিবর্তন ঘটতে পারে?

ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে আবার নিজের জিনগত গঠনে সবসময় পরিবর্তন আনছে - যাকে বলে মিউটেশন।

তাই এ ভাইরাস হয়তো আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এমন আশংকা রয়েছে।

কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবেই বা তা রোধ করা যেতে পারে - এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

সার্স বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এই করোনাভাইরাস তার মধ্যে সর্বশেষ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই 'মিউটেট করছে' অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে - যার ফলে এটি আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ।

 

করোনাভাইরাস নিরাপত্তায় যে সতর্কতা প্রয়োজন

চীনে কেন?

অধ্যাপক উলহাউজ বলছেন, এর বড় কারণ চীনের বিশাল আকৃতি এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং যেসব প্রাণী ভাইরাসটি বহন করে, সেগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

তিনি বলছেন, ''পরবর্তী বড় মহামারি চীন বা এই অঞ্চলে হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।''

মানুষের মধ্যে কত সহজে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে?

রোগটির প্রাদুর্ভাবের শুরুতে চীনের কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে, ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে না- কিন্তু বর্তমানে এ ধরণের রোগী পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, একেকজন সংক্রমিত ব্যক্তি রোগটি গড়ে ১.৪ থেকে ২.৫ জন ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

এই সংখ্যাকে বলা হয় 'বেসিক রিপ্রোডাকশন নম্বর অথবা মৌলিক প্রজনন সংখ্যা'- যা একের বেশি হওয়া মানে হলো রোগটি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে।

সুতরাং আমরা এতদিনে জেনে গেছি যে, এটি এমন একটি ভাইরাস যা নিজে থেকে বিনষ্ট বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে না।

শুধুমাত্র চীনে গৃহীত সিদ্ধান্ত- যেমন শহরগুলো বন্ধ করে দেয়ার মতো কড়া পদক্ষেপের ফলেই শুধুমাত্র রোগটির বিস্তার ঠেকানো যেতে পারে।

যদিও এসব সংখ্যা এখনো প্রাথমিক হিসাব, তারপরেও তারা করোনাভাইরাসকে সার্স ভাইরাসের সেঙ্গ তুলনা করছে।

এখানে আরো উদ্বেগের ব্যাপার হলো, রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন লক্ষণ ছাড়া ব্যক্তিরাও ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারেন।

তবে কতো তাড়াতাড়ি বা কতো সহজে সেটা ঘটতে পারে, তা এখনো পরিষ্কার নয়, কিন্তু এর ফলে ভাইরাসটি সংক্রমণ ঠেকানো আরো কঠিন হয়ে পড়বে।

করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন

কোয়ারেন্টিন কী, কীভাবে ও কেন করা হয়:

 

কোয়ারেন্টিন কী, কেন, কীভাবে করা হয়?

মাস্ক পরে কি ঠেকানো যায়?

ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার যেকোনো খবরের জন্য একটি দারুণ প্রতীকী ছবি হচ্ছে মাস্ক বা মুখোশ পরা কোন মানুষের মুখচ্ছবি।

বিশ্বের বহু দেশেই সংক্রমণ ঠেকানোর একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। বিশেষ করে চীনে, যেখান থেকে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা, সেখানেও মানুষ বায়ুর দূষণের হাত থেকে বাঁচতে হরহামেশা নাক আর মুখ ঢাকা মুখোশ পরে ঘুরে বেড়ায়।

করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন

Image captionআইইডিসিআর-এর এই হটলাইন নম্বর অথবা অন্য নম্বরগুলোতে ফোন করুন সাহায্যের জন্য।

অবশ্য বায়ুবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক কতটা কার্যকর সে ব্যাপারে যথেষ্টই সংশয়ে আছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা, যাদেরকে বলা হয় ভাইরোলজিস্ট।

তবে হাত থেকে মুখে সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ার কিছু নজির আছে।

আঠারো শতকে প্রথম সার্জিক্যাল মাস্কের চল শুরু হয়। কিন্তু ১৯১৯ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির আগ পর্যন্ত এই মাস্ক আমজনতার হাতে এসে পৌঁছায়নি।

ওই মহামারিতে ৫ কোটির মত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

 

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকরী মাস্ক?

ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে সেন্ট জর্জেসের ডঃ ডেভিড ক্যারিংটন বিবিসিকে বলেন, "সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক বায়ুবাহিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয়"।

"বেশিরভাগ ভাইরাসই" বায়ুবাহিত, তিনি বলেন, এবং এই মাস্কগুলো এতই ঢিলেঢালা থাকে যে এটা বায়ুকে ফিল্টার করতে পারেনা ঠিকঠাক। তাছাড়া যিনি এই মাস্ক ব্যবহার করছেন, তার চক্ষু থাকছে উন্মুক্ত।

তবে হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে এই মাস্ক। আর হাত থেকে মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও কিছু সুরক্ষা এটা দেয়।

২০১৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি সমীক্ষায় বলা হয়, মানুষ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২৩ বার হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করে।

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের মলিক্যুলার ভাইরোলজির অধ্যাপক জোনাথন বল বলেন, হাসপাতালের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষায় দেখা গেছে রেসপিরেটর হিসেবে তৈরি ফেস মাস্ক ইনফ্লুয়েঞ্জা ঠেকাতে পারে।

 

বাংলাদেশে শনাক্ত করোনাভাইরাস: প্রতিরোধে যা করবেন

ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
22/03/2020
আর্কাইভ তারিখ
22/11/2020